ডেস্ক নিউজ : প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা মালয়েশীয় তরুণী জুলিজা বিনতে কামিস ও প্রেমিক মনিরুলের বিয়ে হলেও আগের স্বামী মো. আজগর আলী ফেসবুকে তাদের সন্তানসহ গ্রুপ ছবি ও কাবিননামা শেয়ার করায় আত্মগোপনে চলে গেলেন বর-কনে।
এর আগে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) প্রেমের টানে সদূর মালেশিয়া থেকে টাঙ্গাইলের সখীপুরে মনিরুলের কাছে চলে আসেন তরুণী জুলিজা।
মনিরুলের কম বয়স থাকায় ওইদিন রাতেই স্থানীয় মৌলভী দ্বারা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মামার বাসায় তাদের বিয়ে পড়ানো হয়।
আর এদিকে বিয়ের খবর সংবাদ মাধ্যম প্রকাশিত হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় জুলিজার ফেলে আসা বাংলাদেশি স্বামী মো. আজগর আলীর নজরে আসে। পরে তিনি তাদের চার সন্তানসহ একটি গ্রুপ ছবি ও কাবিননামা ফেসবুকে শেয়ার করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইলে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে হৈচৈ পড়ে যায়।
সাংবাদিকরা মনিরুলের বাড়ি গিয়ে নতুন বর-কনের খোঁজ নিতে চাইলে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মনিরুলের বাবা ঈমান আলী বলেন, মনিরুল বউমাকে নিয়ে সকাল থেকে কোথায় আছে বলতে পারবো না। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
মনিরুলের মামা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মনিরুল তার বউকে নিয়ে সকালে বাসা থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। তারপর থেকে তাদের মোবাইলফোন বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ফেসবুকে জুলিকার ফেলে আসা স্বামী মো. আজগর আলী বাংলাদেশের সাংবাদিকের জানান, ১৯৯৬ সালে জীবিকা নির্বাহের জন্য মালেশিয়া চলে আসি। সেখানেই পরিচয় হয় জুলিজার সঙ্গে। ২০০৮ সালে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় আমাদের। আমাদের সংসারে চারটি সন্তানও রয়েছে। তার বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকার ঝিগাতলায়। সেই সন্তানদের ফেলেই শুক্রবার সে বাংলাদেশে চলে আসে।
জুলিজা শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমান বন্দরে এসে নামেন। সেখান থেকে তার প্রেমিক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে ছুটে যান টাঙ্গাইলের সখীপুরে। শুক্রবার সন্ধায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে দেয় মনিরুলের পরিবার।
এদিকে জুলিজার পরিবার দাবি জানিয়ে বলেন, মনিরুল ইসলাম মালেশিয়ায় গিয়ে জুলিজাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। মালেশিয়ান বাংলাদেশী এমব্যাসি সূত্রের বরাত দিয়ে তারা এ দাবি জানান।
মনিরুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে মালয়েশিয়ান যুবতী জুলিজা বিনতে কামিসের সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক হয় মনিরুলের। মনিরুল সখীপুরের সরকারি মুজিব কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর সেই প্রেমের টানেই মালয়েশিয়া শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জুলিজা বিনতে কাসিম মনিরুলকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন।
নতুন বিয়ের পর জুলিজা বলেন, এদেশের প্রকৃতি ও মানুষকে তার খুব ভালো লেগেছে। খাবার খেতে তার কিছুটা সমস্যা হলেও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের আন্তরিকতায় সে মুগ্ধ। সে আরও জানায়, দেশে ফিরে গিয়ে বিয়ের বিষয়টি তার পরিবারকে জানাবেন এবং মনিরুলকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাবেন।
মনিরুল জানায়, ‘আমি জুলিজাকে পেয়ে খুবই আনন্দিত। বিশ্বাস করতে পারেনি জুলিজা তার ভালোবাসার টানে বাংলাদেশে আসবে। মনিরুলের মা মনোয়ারা বেগম জানায়, বিদেশী মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে পেয়ে আমি খুশি।’