কবির হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের মামলা করার অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে আসামী পক্ষের লোকজন বাদীর বাসার বিদ্যূৎ, পানি সাপ্লাই বিছিন্ন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় শিশু ধর্ষণের চেষ্টার মামলার আসামীর আতœীয় স্বজনরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে ওই শিশুর মা মারুফা বেগম বাদী হয়ে এ সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন।
শিশুর পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার কালিয়াদহ এলাকার মুক্তার হোসেন তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কালিয়াকৈর পৌরসভার পুর্বচান্দরা শিয়ালপাড়া এলাকার মনির হোসেনের বাড়ীতে ২য় তলায় ভাড়া থাকেন। পরে স্বামী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালায় এবং স্ত্রী মারুফা স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনের কাজে বেরিয়ে যায়। এ সুযোগে দুপুরে মুক্তার হোসেনের সাত বছরের শিশু কন্যাকে তাদের বাসার বাথ রুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় একই বাসার কেয়ার টেকার বাবুল হোসেন। এসময় ওই শিশুর ডাকাচিৎকার দিলে শিশুর নানী আমেনা বেগম এগিয়ে গেলে লম্পট বাবুল বাথরুম থেকে বেড়িয়ে যায়। এ বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় শিশুর মা বাসায় ফিরে বিষয়টি জানতে পারে। পরে বাসার মালিক মালিক মনির হোসেন স্থানীয়দের কিছু লোক দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ওই শিশুর মা মারুফা বেগম বাদী হয়ে শনিবার বিকেলে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওইদিন বিকেলেই অভিযুক্ত বাবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর জেল হাজতে পাঠায়। গ্রেফতারকৃত বাবুল হোসেন মুনিসগঞ্জ সদর উপজেলার দেওয়ান কান্দি এলাকার হোসেন আলীর ছেলে। সে ওই এলাকার মনির হোসেনের বাড়ীর কেয়ারটেকার।
এদিকে ওই শিশু ধর্ষণের চেষ্টার মামলাটি তোলে নিতে আসামীর পক্ষের লোক কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি হাসনাত রায়হানের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক মামলার বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।
এছাড়া রাতের বেলায় বাদীর কক্ষের বিদ্যুৎ ও পানি সাপ্লাইও রাতে বিচ্ছিন্ন করে দেয় আসামী পক্ষের লোকজন। এঘটনায় কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি হাসনাত রায়হান, ওই বাসার মালিক মনির হোসেন, সফিক হোসেন, মানিক হোসেনের নাম উল্লেখ করে সোমবার বিকেলে ওই শিশুর মা কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নং ১২২৭) দায়ের করে।
শিশুর মা মারুফা আক্তার বলেন, আমার সাত বছরের শিশু কন্যাকে বাসার কেয়ারটেকার বাবুল ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করি। পরে মালিক মনির হোসেন, রায়হানসহ কয়েকজন ওই মামলাটি তোলে নিতে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া এরপর থেকে রাতে বাসার বিদ্যুৎ ও পানি সাপ্লাইও বন্ধ করে দেয় তারা।
কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) নায়েবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাদীকে হুমকির বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।