গাজীপুর প্রতিনিধি : মাত্র দেড় লাখ টাকার অভাবে নিভে যেতে পারে সহায়-সম্বলহীন, দরিদ্র নূর মোহাম্মদের (৩৬) জীবনপ্রদীপ। প্রায় এক বছর যাবৎ দুরারোগ্য ব্যাধি লিভার জন্ডিসে আক্রান্ত নূর মোহাম্মদের চিকিৎসার জন্য দেড় লাখ টাকা প্রয়োজন। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র নূর মোহাম্মদের পরিবারের পক্ষে এ টাকা যোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
বয়সে একজন যুবক হলেও শরীরে বাসাবাধা লিভার জন্ডিস রোগ তাকে বৃদ্ধ বানিয়ে দিয়েছে। নিজেকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে না পারলেও সন্তানদের সে আলোয় আলোকিত করতে চান। কিন্তু এ জন্য তিনি বেঁচে থাকতে চান। আর এ বেঁচে থাকার জন্য সমাজের বৃত্তবান মানুষদের কাছে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
দুরারোগ্য ব্যাধি লিভার জন্ডিসে আক্রান্ত নুর মোহাম্মদ অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোন রকমে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন। এক বেলা খেলে অন্য বেলা খাবার জুটে না। কত রাত যে শুধু পানি পান করে তাদের রাত কেটেছে তার হিসাব নেই। জমি-জমা বলতে সাড়ে তিন শতাংশের একখন্ড ভিটেমাটি। নিজের চিকিৎসার জন্য স্ত্রী-সন্তানের চাপাচাপিতে কয়েদিন আগে তা থেকে এক শতাংশ বিক্রিও করে দিয়েছেন নুর মোহাম্মদ। কিন্তু তাতে কিছুই হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, তার লিভার জন্ডিস বা লিভার ব্লক হয়েছে। এটা অপারেশন ব্লক ছাড়াতে হবে। আর এতে সব কিছু মিলিয়ে তার প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হবে। কিন্তু সেই খরচ যোগাতে পারছেনা বলে বন্ধ হয়ে আছে তার অপারেশন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এ্যালাইড সায়েন্সেস এবং পিজি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ এ.কে.এম ফজলুল বারী বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে অপারেশন করাতে হবে। তা না হলে তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে।
সরেজমিনে নুর মোহাম্মদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, একচালা একটি খোপরি ঘরের সামনে একটি পাটিতে শুয়ে আছে। বয়সে যুবক হলে শরীরে বাধা রোগ তাকে সত্যি বৃদ্ধের মত দেখাচ্ছে। এ প্রতিবেদককে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। বললেন, তার পেট ফেপে যায় ও ব্যাথা করে। এছাড়াও ব্যাথার কারণে প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট হয় তার। ‘‘আমি বাঁচতে চাই স্যার, আমি বাঁচতে চাই। আপনারা আমাকে বাঁচান’’ বলে আবারও কেঁদে উঠলেন। স্ত্রী শাহানাজ বেগম শুধু ফেলফেল করি তাকিয়ে আছেন। দু’চোখ তার অশ্রæবন্যা। ঘরে তাদের দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় মেয়ে নুরুন্নাহার (১৩) উপজেলার জামালপুর ফারুকীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ে। বড় ছেলে শান্ত হোসেন (১১) পড়ে খলাপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার হেফজে বিভাগে। আর সবার ছোট ছেলে লাবিব হোসেন (৪)। অভাবের কারণে নিজে জ্ঞানের আলো পাননি। তাই নিজে পরিশ্রম করে সন্তানদের সে আলোয় আলোকিত করতে চান। আর এজন্য তিনি বাঁচতে চান। সমাজের বৃত্তবান মানুষগুলো তার পাশে সাহ্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই কেবল তিনি বাঁচতে পারেন। আলোকিত করতে পারেন তার পরিবার ও সন্তানদের।
নুর মোহাম্মদকে সাহায্য পাঠাতে পারেন ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) কালীগঞ্জ শাখা (মো. নুর মোহাম্মদ, হিসাব নং: ১৩৪৩২০১০০০০১৫৩৯৫) অথবা তার ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে (০১৮৬২৯৩৭৮৪৯) ।