কালিয়াকৈরে টিকিট কাউন্টারে সন্ত্রাসী হামলা করে লুটপাট, ভাংচুর ও ২ যুবককে কুপিয়ে আহত করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা

0
1714
Print Friendly, PDF & Email

আলমগীর হোসেন : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসের টিকিট কাউন্টারে সন্ত্রাসী হামলা করে লুটপাট ও ভাংচুরসহ দুই যুবককে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে স্থানীয় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। এসময় কাউন্টার থেকে হামলাকারীরা নগদ বিশ হাজার টাকা ও দুইটি এন্ডোয়েড মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ঘটনায় আহতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার মোঃ মালেক মিয়ার ছেলে মামুন হোসেন (১৯) এবং গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মৃত ছাদেক আলীর ছেলে বাবুল হোসেন (৩৫)। তারা উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় থেকে ডিভাইন গেট এলাকায় বাসের টিকিট কাউন্টার ব্যবসা করেন।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় দীর্ঘ্য দিন যাবত মল্লিক এর সাথে পার্টনারে আকবর নামে একব্যক্তি গাড়ীর টিকিট কাউন্টার করে ব্যবসা করে আসছিল। পরে গত দেড় মাস আগে আকবর জানতে পারে তার পার্টনার মল্লিক ওই কাউন্টারের আড়ালে তার দুই ছেলে শাওন ও সিফাতকে দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। পরে বিষয়টি মল্লিককে অবগত করে তার ছেলেদের কাউন্টার এলাকায় মাদক বিক্রি করতে নিষেধ করেন। কিন্তু সে তার কথা না শুনে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। পরে উপায় না দেখে তিনি মল্লিককে বলেন, হয় সে মাদক ব্যবসা ছাড়বেন না হয় তার অংশিদারিত্ব বাবদ দেওয়া টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে। কিন্ত সে তা না করে কিছুদিন আগে এলাকার সাধারন মানুষের আতঙ্ক সন্ত্রাসী মুচি জসিমের ভয় দেখিয়ে এবং তাদের লোক দিয়ে আমাকেই প্রাণ নাশের হুমকি দিত। পরে গত কয়েকদিন আগে সন্ত্রাসীদের গুলিতে সন্ত্রাসী জসিম মারা যায়। এর কয়েকদিন পর মল্লিককে অংশিদারিত্বের টাকার জন্য চাপ দিলে সে তার মাদক ব্যবসা না ছেড়ে তার অংশিদারিত্বই আকবরের কাছে বিক্রি করে কাউন্টার তাকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান। এর মাত্র কয়েকদিন পর শনিবার রাতে মল্লিকের ছেলেরা ওই কাউন্টারে ও এর আশপাশে মাদক বিক্রি করছিল। পরে কাউন্টারের লোকজন ওখানে মাদক বিক্রি করতে বাধা দিলে ঘটনাটি ঘটে।

আহতদের বরাত দিয়ে মামুনের ফুফাত ভাই খাত্তাব মোল্লা জানান, শনিবার (২২সেপ্টেম্বর) রাতে মল্লিকের ছেলেরা ওই কাউন্টারে ও এর আশপাশে মাদক বিক্রি করছিল। পরে কাউন্টার মালিক আকবর তাদের লোকজন নিয়ে কাউন্টার এলাকায় মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়। এর কিছুক্ষন পর মল্লিক বাহিনির সন্ত্রাসীরা ধারলো দা, চাপাতি ও লাঠি সোঠা নিয়ে তাদের উপর অর্তকিত হামলা চালায়। এসময় ওই কাউন্টারের টিকেট বিক্রিরত মামুন ও বাবুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহতসহ কাউন্টারে লুটপাট ও ভাংচুর চালিয়ে টিকেট বিক্রির নগত প্রায় ২০হাজার টাকা এবং দুইটি এন্ডোয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে তাদের আত্ম চিৎকার শুনে স্থানিয় জনতা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানিয়রা তাদের উদ্ধার করে স্থানিয় হাসপাতালে নিয়ে যায়।পরে সেখানে তাদের অবস্থা গুরুতর দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে দুজনের মধ্যে মামুনের অবস্থা বেশি আশংখাজনক বলে তিনি জানান।

স্থানিয় কয়েকজন জানান, মল্লিক ও তার দুই ছেলে খুবই খারাপ তারা মাদক ব্যবসার সাথে জরিত। কিছুদিন আগেও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মল্লিক ও তার দুই ছেলে মিলে দুই যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্ব আহত করে। ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এতে তারা থামেনি বরং আগের চেয়ে আরো সক্রিয় ভাবে তারা তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। থানায় তার ও তার ছেলেদের নামে একাধিক মাদক মামলাসহ নারী নির্যাতনের মামলাও রয়েছে। এর পরও পুলিশ প্রশাসন কেন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না এটা তাদের প্রশ্ন?

কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং সন্দেহমূলক ভাবে প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের জন্য একজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান ওই এসআই।

শেয়ার করুন