আলমগীর হোসেন : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৬ দিন বাঁকি। শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। দিন-রাত চালিয়ে যাচ্ছে প্রচারণা। গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সাথে ভোটারদেরও দিচ্ছে নানা প্রতিশ্রুতি। অপর দিকে বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতিকের প্রাথী চৌধুরী তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকী দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এক সপ্তাহ আগে প্রচারণা শুরু করে মাঠে নামলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঘটনায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়। এর পর থেকে মামলার ভয়, প্রচারণায় বাঁধা, সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নামতে পারছেনা বলে দাবী করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। বর্তমানে অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের নামে মামলা থাকার কারণে খুব একটা প্রচার-প্রচারনা করতে পারছেন না বিএনপি। চোখে পড়ছে না তাদের প্রচারণা। আর ভোটাররা রয়েছে ভোট গ্রহণের দিনের অপেক্ষায়। তবে একটি আনন্দঘন উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য সকল কার্যক্রম শেষ করেছে প্রশাসন।
গাজীপুর– দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জেলা। ঐতিহ্য, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট জেলাটিকে তুলে ধরেছে বিশ্ব পরিমন্ডলে।
গাজীপুর জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দেশের সমসাময়িক চিন্তাভাবনার মূল ধারায় প্রবাহিত হয় সবসময়। গাজীপুর জেলা থেকে নির্বাচিত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে। আর তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর জেলার আসনগুলোতে নজর থাকে সবারই।
গাজীপুর জেলাকে ৫টি সংসদীয় আসনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরে ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জয়-জয়কার। ফলে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আ’লীগের তুলনামূলক প্রচারণা বেশী থাকলেও দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রচারণা অনেকাংশে কম।
গাজীপুর-১ : শিল্প অধ্যুষিত সংসদীয় আসন ১৯৪ গাজীপুর-১ জেলার কালিয়াকৈর উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। মোট ভোটার সংখ্যা ৬৬৪৫১৯। আর বিপুলসংখ্যক ভোটারদের অনেক বড় অংশ শ্রমিক ও তরুণ। গাজীপুর-১ আসনে মূল লড়াইটা হয় আ’লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে। আর এ আসনে তাই হেভিওয়েট প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেয়া হয় বড় দলগুলো থেকে।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন গাজীপুর জেলা আ’লীগের সভাপতি, সরকারের মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এ্যাড আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এবং বিএনপি থেকে ধানের শীষে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী।
গাজীপুর-১ আসনে বরাবরই আ’লীগের জয়-জয়কার। ১৯৯১ সাল থেকে আসনটি আ’লীগের দখলে। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরপর দুইবারই আ.ক.ম মোজাম্মেল হক নির্বাচিত হয়। আর এবারও তার জয়ের সম্ভাবনা দেখছে নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা।
বিগত ১০ বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নৌকার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে নৌকার প্রার্থী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। দিন-রাত তারা নৌকার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এবারও নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে একাট্টা স্থানীয় আ’লীগ।
অপরদিকে, গাজীপুরের রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে পড়া বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে নিয়েছে। গাজীপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী ১০ বছর পর রাজনীতিতে ফিরেছে। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী নেতা-কর্মীদের নিয়ে ইতিমধ্যে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নেতা-কর্মীদের নামে মামলা থাকার কারণে খুব একটা চোখে পড়ছে না তাদের প্রচারণা। মামলার ভয়, প্রচারণায় বাঁধা দেয়ার কারণেই মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নামতে পারছেনা বলে দাবী করছে দলটির নেতারা।
এখন কেবল অপেক্ষার পালা ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। কে হাসবে জয়ের হাঁসি ?