গাজীপুর প্রতিদিন ডেস্ক : গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের আত্মীয় পরিচয়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার নামে নিয়োগ প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারি থানার রাজাপুর গ্রামের সৈয়দ আলী আফজালের সন্তান সৈয়দ মাহনুর হাসান জুয়েল (৩২) ও তার বড় ভাই সৈয়দ মাহবুব হোসেন (৪৮)।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের এসপি শামসুন্নাহারের জন্মস্থান ফরিদপুর জেলায়। আসামিরা ফরিদপুরের বাসিন্দা হওয়ায় এসপির নাম ভাঙানোর সুযোগ পায়। ফরিদপুরের পরিচয় দেওয়া একটি কৌশল বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল পৌনে ১১টায় নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, গাজীপুরে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র তার নাম ভাঙিয়ে ও আত্মীয় পরিচয় দিয়ে নিয়োগ প্রত্যাশীদের অভিভাবকদের কাছে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছিল। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক সৈয়দ মাহনুর হাসান জুয়েলকে ঢাকার মালিবাগ থেকে গত শুক্রবার বিকালে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বড় ভাই সৈয়দ মাহবুব হোসেনকে গাজীপুরের মৌচাক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা এসপির কি আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিল এটি জানা যায়নি। সকাল ১০টায় ওই ব্রিফিং হওয়ার কথা ছিল। এতে লিখিত একটি বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, প্রতারকরা দেশের ১১টি জেলার ১৫ জন রিক্রুট কনস্টেবল প্রার্থীদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আসামিদের হেফাজত থেকে দুটি মোবাইল ফোন, পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। ১৫ জন প্রার্থীর কেউই গাজীপুর জেলার বাসিন্দা নন। প্রেসনোটে ১১ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গাজীপুর জেলায় ৫২ জন নারী ও ১৩১ জন পুরুষ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়াদের গত ৪ জুলাই এসপি শামসুন্নাহার ব্রিফিং করেছেন।
এর আগে গত ২৬ জুন কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার বাছাইয়ের সময় প্রক্সি দিতে গিয়ে দুইজন আটক হয়েছেন। পরে তাদের অভিভাবকের মুচলেকার প্রেক্ষিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে যারা অধিকতর যোগ্য, নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি এমন প্রার্থীদের টার্গেট করে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের টার্গেট বিষয়ে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা এটি আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে বলে আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন এসপি।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে এসপি বলেন, পুলিশে স্বচ্ছভাবে নিয়োগের বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। যারা এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রতারণায় যুক্ত তারা বেশ চালাক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আমিনুল ইসলাম ওই দিন বিকাল পাঁচটায় জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াটি শেষ করে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করা হবে।