ডেস্ক নিউজ : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় তিতাস গ্যাস চুরির অভিযোগে গত বুধবার রাতে বজলুর রহমান নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে সাড়ে ৯কোটি টাকার মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন গাজীপুর তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির চন্দ্রা শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুসফিকুর রহমান খান। ওই ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমানের স্বত্তাধিকারী মেসার্স তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং ষ্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস লাইন বাইপাস করে অবৈধভাবে বিক্রি করার অভিযোগে গ্যাস কোম্পানি ৯ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ উল্লেখ্য করে এ মামলা দায়ের করেন। তবে ওই সিএনজির মালিক আওয়ামী লীগের নেতা ও দাপুটে চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের দাবী তিতাস গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীর মাধ্যমেই ওই অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে তার কর্মচারীরা চালাতো। এই ঘটনার জন্য গ্যাস কোম্পানির লোকজনই দায়ি।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির চন্দ্রা শাখার কর্মকর্তা, পুলিশ ও তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং এর কর্মচারীরা জানান, গত ছয় মাস ধরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোয়ালবাথান হাইটেক পার্ক সংলগ্ন এলাকায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির ভূ-গভ্যস্থ গ্যাসপাইপ অবৈধভাবে বাইপাস করে গ্যাস বিক্রি করতো। এ খবরটি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির চন্দ্রা শাখার কর্মকর্তারা খবর পেয়ে গত ৩ জুন ওই মের্সাস তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং ষ্টেশনে অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন করেন। পরে নিয়ে তিতাস কোম্পানির উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত বুধবার রাতে ওই নেতার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি পুলিশ আমলে নিয়ে রজু করে আজিম হোসেন খান নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন।
তিতাস গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তারা আরো জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর বাইপাস থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত অর্ধশতাধিক এই সিএনজি পাম্পের মালিকরা অবৈধভাবে বাইপাস করে অহরহ গ্যাস চুরি করে বিক্রি করছেন। তিতাস গ্যাস কোম্পানি জানার সাথে ওই সব অবৈধ সংযোগ অপসারণ করছেন। গত এক মাসে আরো ২-৩টি সিএনপি পাম্পের অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মের্সাস তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং ষ্টেশনের স্বত্তাধিকারী, সূত্রাপুর ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, আমার সিএনজি পাম্পে ভাগিনারা তিতাস গ্যাস কোম্পানির লোকজনের সাথে পরামর্শ করেই গ্যাস চুরি করে বিক্রি করতো। এঘটনার জন্য তিতাস কোম্পানির লোকজন দায়ি। যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বো। জরিমানার বিষয়ে তিনি আরো জানান, মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে আমার নামে মামলা দিয়েছে। যার কোন ভিত্তি নেই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজিম হোসেন খান জানান, মামলাটি আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির চন্দ্রা শাখার জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মামুনুর রহমান জানান, ওই মেসার্স তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং ষ্টেশনের লোকজন মিটারিং টেম্পার করে গ্যাস চুরি করার জন্য একাধিক অভিযান করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সিএনজি পাম্পের লোকজনকে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিলেও গত ছয় মাস ধরে ভূ-গভ্যস্থ পাইপ থেকে বাইপাস করে গ্যাস চুরির করে। এঘটনায় কোম্পানির ক্ষতিপূরণ দাবি করে মেসার্স তুরাগ সিএনজি ফুয়েলিং ষ্টেশনের মালিক বজলুর রহমানের নামে একটি মামলা করা হয়েছে।