কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাবেক এক সেনা সদস্যসহ দুজনকে পিটিয়ে আহত করেছে কয়েকজন যুবক। এঘটনায় গতকাল শনিবার দুপুরে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত সাবেক ওই সেনা সদস্য।
আহতরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার উত্তর মৌচাক এলাকার মৃত আঃ রহমান শেখের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (৩৫)। তিনি সেনা বাহিনীর ল্যান্স কর্পোরাল ছিলেন। অপর আহত মৌচাক এলাকার পিতা আবুল কাশেমের ছেলে সুলতান (২৪)।
আহতরা ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমান প্রায় দেড় বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর সাবেক ওই সেনা সদস্য মৌচাক থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি উত্তর মৌচাক এলাকায় পৌছলে কয়েকজন যুবকের হৈহুল্লা শুনতে পান। পরে তিনি কাছে গিয়ে দেখেন বাড়ির সামনে প্রতিবেশী শাজাহান মিয়ার ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে ও তার এক সহপাঠীকে (ছেলে) আটক করেন ওই যুবকরা। এসময় তারা ওই মেয়ে ও তার সহপাঠীর কাছে টাকা-পয়সা দাবীতে মারপিট করে। পরে যুবকদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যান সাবেক ওই সেনা সদস্য। কিন্তু উক্ত আক্রোসে ওইদিন রাত ৮টার দিকে রাব্বি, নাজমুল, ইমন, সবুজ, জুয়েল, সজিবসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৩/৪ জন স্থানীয় যুবক দা, লাটি, রড, পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বেআইনীভাবে সাবেক ওই সেনা বাড়ির সামনে গিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে।
এক পর্যায় তার বাড়ির সামনে বাগানে পেয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এসময় তার খালাত ভাই সুলতান তাদের ফেরাতে গেলে তারা তাকেও মারধর করে। পরে তারা সাবেক ওই সেনা সদস্যের গলায় ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও শার্টের পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় দৌড়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলে প্রাণে বেঁচে যান সাবেক ওই সেনা সদস্য। পরে তাকে ও তার খালাত ভাইকে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায় ওই যুবকরা। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে ও তার খালাত ভাই সুলতানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় আহত সাবেক ওই সেনা সদস্য বাদী হয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
এব্যাপারে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও অভিযুক্ত যুবকদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
তবে স্থানীয় শাজাহান মিয়া জানান, ওই রাতে আমার বাড়ির সামনে আমার মেয়ে সঙ্গে মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক ছেলে আসে। এসময় আমার স্ত্রী ও অপর কন্যাও ছিল। কিন্তু ওই যুবকরা তাদের গালাগালি করলে মিজানুর ভাই তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর আবার রাতে কি নিয়ে তাদের সঙ্গে ঝামেলা হলো, তা জানি না।
আহত সাবেক ওই সেনা সদস্য মিজানুর রহমান জানান, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে খুন করতে চেয়েছিল। অল্পের জন্য দৌড়ে প্রাণে বেঁচে যাই। আমি এর বিচার চাই।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটা অভিযোগ হয়েছে।